গোষ্টীর বর্ণিল সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে বলছেন সংস্কৃতিজনেরা।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেঁষে নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার গারো পাহাড়ী জনপদ। এক সময় এই জনপদের আদিবাসি জনজাতির মানুষেরা রাতভর মেতে থাকতো সংগীতের সুরে। সন্ধ্যা হতেই শোনা যেত গারো, হাজং, কোচ, হদি, বানাইদের নিজস্ব ভাষার সংগীতের সুর। মাদল,
ধামা, রাং, গংগনা, খ্রাম,করতালের আওয়াজ ,আদরু আর বাশের বাশির সুর । গ্রামে গ্রামে বসতো লোক গানের আসর, ঐতিহ্যের রং পাহারী পোষাকে সজ্জিত নর-নারীদের লোক নৃত্য পরিবেশন, কবিগান, গীতি নৃত্য নাট্য, পালা গানের আসর। সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো ছাড়াও বাড়িতে বাড়িতে নিয়মিত এমন চর্চার চিত্র ছিল প্রতিদিনকার।
নিশি কান্ত মাঝি, যতীন্দ্র রুরাম, সান্তনা রাংসা, চন্দনা হাজং , মালা মারথা আরেং, ফরিদ জাম্বিল, হাসিনা স্নালের মতো সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জাতীয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতিমান শিল্পীদের জন্ম এই জনপদে। সময়ের ব্যবধানে এখানে এখন আর আগের মতো সাংস্কৃতিক চর্চা হয়না। আর্থিক টানাপড়েনে সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো আগের মতো কাজ চালিয়ে যেতে পারছে না।
আকাশ সংস্কৃতির দাপট, সরকারি বেসরকারি পৃষ্টপোষকতার অভাব, আর্থিক সংকট, বৃহত্তর বাঙ্গালী সংস্কৃতির প্রভাবসহ নানা কারনে কাজ করতে না পারার কথা জানিয়েছেন আদিবাসিরা। ইতিমধ্যে আদিবাসি সংস্কৃতির মূল্যবান অনেক উপাদান হারিয়ে যাওয়ার কথাও জানিয়েছেন তারা।
ব্যাপক গবেষণা ও নিজেদের আরো বেশি করে এগিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন বলেছেন, বর্তমানে এর কার্যক্রম জোরদার হয়েছে। সরকারি পৃষ্টপোষকতাও বাড়ানো হয়েছে। বৃহত্তর সমাজের সংস্কৃতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্টীর সংস্কৃতির উন্নয়নে কাজ চলছে।
ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্টীর শিল্প সংস্কৃতি, কৃষ্টির হারানো ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনতে সরকারী বেসরকারী পর্যায়ে পৃষ্টপোষকরা এগিয়ে আসবেন। উজ্জিবীত হবে সাংস্কৃতিক অঙ্গন এমনটাই আশা করছেন ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্টী জনেরা।